রামপালে ভবন দখলে নিতে সঙ্গীত শিল্পিকে মারধর


বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৩০, ২০২৫, ৪:০৯ পূর্বাহ্ন /
রামপালে ভবন দখলে নিতে সঙ্গীত শিল্পিকে মারধর

রামপাল প্রতিনিধি

বাগেরহাটের রামপালে ভবন দখলে নিতে সঙ্গীত শিল্পি রাজিব ইমতিয়াজ পরাগ (৪৪)কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাগেরহাট জেলা যুবদলের সাবেক সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাওলাদার মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বড়সন্নাসী বাজার এলাকায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে।এর আগেও স্থানীয়দের ঘের দখল, মারধর ও বাড়ি-ঘর দখলের অভিযোগ রয়েছে এই নেতার বিরুদ্ধে।

মারধরের শিকার সঙ্গীত শিল্পি রাজিব ইমতিয়াজ পরাগ বড়সন্নাসী এলাকার মৃত এ্যাড. আবুল হোসেনের ছেলে। তবে পেশাগত কারণে তিনি মাকে নিয়ে খুলনা শহরে বসবাস করেন।

অভিযুক্ত সাবেক যুবদল নেতা মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের বাসিন্দা।

রাজিব ইমতিয়াজ পরাগ বলেন, বড়সন্নাসী বাজার সংলগ্ন এলাকায় আমাদের নিজস্ব জমিতে দুই তলা ভবন ও ১৫টি দোকান ঘর রয়েছে। গেল ২৩ নভেম্বর বাবা মারা যাওয়ার পরে বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম ওই ভবন ও দোকানগুলো দখলে নেওয়ার জন্য অপচেষ্টা শুরু করে।বিভিন্ন লোক দিয়ে ওই ভবন তার কাছে ভাড়া দেওয়ার জন্য বলায়। রাজি নাহলে, আমাকে হুমকি-ধামকিও দিয়েছে কয়েকবার। আমার কাছে চাঁদাও চেয়েছে। এসব বিষয়ে গেল ৩০ ডিসেম্বর রামপাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, সব শেষ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি)মা-বোনকে নিয়ে আমরা বাড়িতে আসি। আমরা যখন বাড়ির সামনে ও পিছনে থাকা জমির সীমানা নির্ধারণের কাজ করছিলাম, তখন জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০-২৫ লোক এসে আমাদের উপর হামলা করে। তাৎক্ষনিকভাবে আমার বোন বিষয়টি পুলিশকে জানায়। রামপাল থানা থেকে আসা এসআই রেজা ও রিপনের সামনেই জাহিদ ও তার লোকজন আমাকে বেধরক মারপিট করে। আমার বড় বোনকেও মারধর করে। বোনের গলায় থাকা একটি স্বর্নের চেইন এবং হাতে থাকা বিভিন্ন জমির চারটি দলিল ছিনিয়ে নিয়ে যায় জাহিদ ও তার লোকজন। এই অবস্থায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ দখলের নিশ্চয়তা চাই। মারধরের সঠিক বিচারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই শিল্পি। এছাড়া এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

শুধু রাজিব ইমতিয়াজ পরাগের ভবন নয়, গেল ৫ আগস্টের পরে বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে রামপাল উপজেলার মল্লিকের বেড়, সন্নাসী, বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘের দখল, চাঁদাবাজি ও নিরহর মানুষদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বাগেরহাট জেলা যুবদলের সাবেক সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাওলাদার মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। যদি কেউ এমন অভিযোগ করেন, তা মিথ্যা।

এবিষয়ে রামপাল উপজেলা বিএনপির আহবায়ক হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, রামপাল উপজেলার ১০ ইউনিয়নে যদি দুই-চার জন খারাপ লোক থাকেন তার মধ্যে জাহিদুল ইসলাম অন্যতম। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মোঃ সেলিম রেজা বলেন, একটি ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। তবে কোন পক্ষ কোন অভিযোগ দেয়নি।অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, দলে কোনো খারাপ জায়গা হবে না। আমাদের কাছে হাজারো অভিযোগ জমা পড়েছে, প্রতিদিন নতুন নতুন অভিযোগ আসছে।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা স্পষ্ট, দলে কোন খারাপ মানুষের জায়গা নেই। দলকে শুদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিগগিরই শৃঙ্খলাভঙ্গকারী ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।