স্বল্প সংখ্যক ক্রেতা থাকলেও বিক্রি নেই তেমন…

বাগেরহাটে দূর্গা পূজার উত্তাপ নেই বাজারে, হতাশায় ব্যবসায়ীরা 


বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৭, ২০২৪, ১:৫০ অপরাহ্ন /
বাগেরহাটে দূর্গা পূজার উত্তাপ নেই বাজারে, হতাশায় ব্যবসায়ীরা 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার উত্তাপ নেই বাগেরহাটের বাজারে। মাত্র একদিন পরে বুধবার (০৯  অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। মেষ সময়েও বাজারে তেমন ভীড় নেই। পূজা উপলক্ষে কাঙ্খিত বিক্রি না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন থৈরি পোশাক বিক্রেতারা। সোমবার (০৭অক্টোবর) বিকেলে  বাগেরহাট  শহরের কাপড় পট্টি, হাজী রিয়াজ উদ্দিন মার্কেটসহ বিভিন্ন গলি ঘুরে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। কোন কোন দোকানে স্বল্প সংখ্যক ক্রেতা থাকলেও তেমন বিক্রি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছর পূজার ৭দিন আগে থেকে পূজা শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রচুর পরিমান ক্রয়-বিক্রয় হত বাজারে। দল বেঁধে কেনাকাটা করতে আসতেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কিন্তু এবার তেমন কোন ক্রেতা নেই। পূজাকে কেন্দ্র করে দোকানে নতুন পোশাকের পর্যাপ্ত সংগ্রহ থাকলেও সে অনুযায়ী এবার ক্রেতা নেই।

শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এবার দুর্গাপূজায় সাধারন, পোশাকের কদর বেশি। শরতের মোহনীয় রূপের সঙ্গে মানানসই ধর্মীয় এবং ট্রেন্ডি পোশাক এখন হালফ্যাশনে জায়গা করে নিয়েছে। ধুতি, পায়জামা, পাঞ্জাবি, প্যান্ট, টিশার্ট, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, থ্রিপিস, জুয়েলারি, শাখা রয়েছে কেনাকাটার পছন্দের তালিকায়। যুক্ত হয়েছে ওয়েস্টার্ন পোশাকও, তবে এবার ক্রেতা নেই বললেই চলে।

প্রসাধনী বিক্রেতা বিজয় কুমার বলেন,  গতবারের তুলনায় এবছর বেচা বিক্রি কম। মানুষের আয় ইনকাম কম থাকায়,  ক্রেতারাও কম আগ্রহ দেখাচ্ছে।

বাচ্চার জন্য পূজার পোশাক কিনতে আসা মৌসুমি দেবনাথ নামের এক নারী বলেণ, আমি আমার বাচ্চার পছন্দ মতো জামা কিনেছি।কিন্তু জামা কাপড়ের দাম বেশি। তারপর ও যেহেতু বাচ্চা পছন্দ করছে তাই তার পছন্দ মতো নিয়েছি।

ব্যবসায়ী আবদুল কাদের  বলেন, মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে, তবে এটাকে ভালো বলা যায় না।  কাল বাদে পরশু পূজা শুরু।  তবে  পূজার কেনাকাটার আমেজ এখনো শুরু হয়নি।

থ্রিপিসসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের ব্যবসায়ী দোলাল চন্দ্র দাস  বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি অর্ধেকের ও কম ৷ গত বছর পূজার দুই সপ্তাহ আগে থেকেই দৈনিক ৩০-৪০ হাজার টাকা বিক্রি হতো। এবার সেটা ১০-১৫ হাজারে নেমেছে। পূজা শেষ হলে সেটা আরও কমে দৈনিক ৫-৬ হাজারে নামবে। সব মিলিয়ে ব্যবসার অবস্থা ভালো না।

তন্ময় সরকার নামের এক ক্রেতা বলেন, কাপড়ের দাম অনেক বেশি। ইচ্ছা ছিল শার্ট, প্যান্ট কিনবো। দাম বেশি হওয়ায় শুধু প্যান্ট কিনেই ফিরে যাচ্ছি৷ বাজেট কম, পরে এসে শার্ট কিনবো।

কাপড় ব্যবসায়ী তারিকুল ইসলাম বলেন, এবারের পূজায় ব্যবসার অবস্থা ভালো না। এবার বেচাকেনা ভালো না। ব্যবসা খারাপ। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে মানুষ বিলাসিতার জন্য কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছে।

বস্ত্র ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও কাটা কাপড় মালিক সমিতির সভাপতি কার্তিক ভট্টাচার্য বলেন, এইবার পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো না থাকার করণে বিক্রি কম।রাজনৈতিক অস্থিরতা, বন্যা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ ও অর্থনৈতিক ভাবে দূর্বল। এবার কাপড় ব্যবসায়ীদেরও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, হয়তো পূজার পর অনেক দোকান বন্ধ হয়ে যেতে পারে।