২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের ইতি ঘটে। রাজনৈতিক চাপ ও পরিস্থিতির মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন।
অভ্যুত্থানের মাত্র তিন দিনের মাথায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন মুহাম্মদ ইউনূস। আন্দোলনকালীন সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও মধ্যম পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ডজনের পর ডজন মামলা হয়। আওয়ামী লীগের সময়ে যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল, সেই একই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থান দমাতে গিয়ে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে অভ্যুত্থানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব। যদিও এ দাবির পক্ষে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে মাত্র তিন দিন আগে। সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবর নিয়ে আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেয় একদল বিক্ষোভকারী। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার জুমার পর তারা মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে মঞ্চ বানিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন। সেখান থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেন।
সেদিন বিকাল থেকেই তারা টানা অবস্থান করছিলেন শাহবাগে। শনিবার বিকালে সেখানে গণজমায়েত করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করাসহ তিন দফা দাবি তারা তুলে ধরেন। অবরোধ কর্মসূচিতে ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ, করতে হবে করতে হবে’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ‘ব্যান ব্যান, আওয়ামী লীগ’, ‘দফা এক দাবি এক, লীগ নট কাম ব্যাক’, ‘এক দুই তিন চার, চুপ্পু তুই গদি ছাড়’, ‘আওয়ামী লীগের নিবন্ধন, বাতিল কর করতে হবে’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
আপনার মতামত লিখুন :