অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বাধীন নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ এবং জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জুলাই আন্দোলন দমনকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করে স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দলটির বিরুদ্ধে বিচার শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা শেষে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সভায় তিনটি সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।
০১/ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী সভায় অনুমোদন পেয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল এখন থেকে কোনো রাজনৈতিক দল, তাদের সহযোগী সংগঠন বা সমর্থকদের বিরুদ্ধে রায় প্রদান ও শাস্তি প্রদান করতে সক্ষম হবে।
০২/ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিরুদ্ধে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা, জুলাই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার লক্ষ্যে দলটির সব কার্যক্রম, সাইবার জগৎসহ, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে স্থগিত থাকবে।
০৩/ পাশাপাশি, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর ‘সন্ত্রাসী’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এখন বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত একই আইনের আওতায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল শেখ হাসিনার সরকার পতনের তিন দিন পর ক্ষমতায় আসা মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।
উপদেষ্টা পরিষদের সভার এই সিদ্ধান্ত টেলিভিশনের লাইভে প্রচারিত হওয়া মাত্র শাহবাগ ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
অনেকেই স্লোগান ধরেন, ‘এ মুহূর্তে খবর এল, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হল’।
জামায়াতে ইসলামী মধ্যরাতে রাজধানীর মগবাজার চৌরাস্তায় শোকরানা সমাবেশের আয়োজন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল বের করেন বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
আপনার মতামত লিখুন :