সুন্দরবনে বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুর বাসকার ৬৫ বাচ্চা ফুটেছে


বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক প্রকাশের সময় : মে ৫, ২০২৫, ১:০০ অপরাহ্ন /
সুন্দরবনে বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুর বাসকার ৬৫ বাচ্চা ফুটেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বিলুপ্ত বাটাগুর বাসকা (কচ্ছপ)‘র ডিম ফুটে ৬৫টি বাচ্চাজন্ম নিয়েছে। সোমবার (৫ মে) ভোরে বাচ্চাগুলোকে বিশেষ ইনকিউবেটর থেকে তুলে কেন্দ্রের কচ্ছপ লালন-পালনকেন্দ্রর সংরক্ষণ প্যানে রাখা হয়।

এর আগে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রয়ারি তিনটি বাটাগুর বাস্কা মোট ৮২টি ডিম দেয়। পরে সেগুলো সংগ্রহ করে বিশেষ ইনকিউবেটরে (পুকুরপাড়ের বালুর চর)রাখা হয়। রোববার (০৪ মে) থেকে বাচ্চাগুলো ফুটে বের হতে শুরু করে। সব মিলিয়ে সোমবার সকাল পর্যন্ত ৬৫টি বাচ্চা হয়। অবশিষ্ট ডিমগুলে নষ্ট হয়েছে। এ পর্যন্ত সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে ৫২১টি ডিম থেকে ৪৭৫টি বাচ্চা ফুটেছে বলে জানান সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল বন্য প্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।

তিনি বলেন, তিনটি বাটাগুর বাসকা মোট ৮২টি ডিম দিয়েছিল। নিবির পরিচর্যা ও বিশেষ ইনকিউবেটরে বালুর মধ্যে রেখে আমরা বাচ্চা ফুটানোর চেষ্টা করেছি। মোট ৬৫টি বাচ্চা ফুটেছে। বাচ্চাগুলোকে কচ্ছপ লালন-পালনকেন্দ্রর সংরক্ষণ প্যানে রাখা হয়েছে। বড় হলে এগুলো সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হবে।


বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্র সূত্রে জানাযায়, পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে। একসময় এ অঞ্চলে প্রায় ২৬টি প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যেত। এর মধ্যে বাটাগুর বাসকার প্রজাতির কচ্ছপ আর দেখা যাচ্ছিল না। ২০০০ সালের দিকে বন্যপ্রানী গবেষকরা মনে করেণ পৃথিবীতে আর বাটাগুর বাসকার কোন অস্তিত্ত্ব নেই। পরে ২০০৮ সালে গবেষকরা প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা আছে কিনা তা খুজতে শুরু করেন। খুজতে খুজতে নোয়াখালি ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী। প্রজননের জন্য গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয় কচ্ছপগুলোকে।বনবিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকেরা নিবিড়ভাবে লালন পালন ও প্রজননের চেষ্টা করে বাটাগুর বাসকা গুলোকে। তারপরও তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি।তবে কয়েক বছরে গাজিপুরে প্রায় ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল ৮টি মা কচ্ছপ। সেখানে ভাল সাড়া পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেয়া ৯৪টি ছানাসহ করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপের ৬৩টি টি ডিম থেকে ৫৭ টি বাচ্চা হয়। ২০১৮ সালে দুটি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১ টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২ টি ডিম থেকে ৩২ টি বাচ্চা পাওয়া যায়।২০২০ সালে ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা পাওয়া যায়। এসব বাচ্চা থেকে ২০১৭ সালে ২ টি, ২০১৮ সালে ৫টি, ২০১৯ সালে ৫ টি কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করে বন বিভাগ। পরে ২০২০ সালে ১০ টি কচ্ছপ সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়।