নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোমবার (২ জুন) বিকেলে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার এ বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেট উপস্থাপন করা হয় টেলিভিশনে দেওয়া তাঁর ভাষণের মাধ্যমে।
প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু পণ্য ও সেবার ওপর শুল্ক ও করহারে সংশোধনের প্রস্তাব রয়েছে। ফলে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে, আবার কিছু পণ্যের দাম কমারও সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী, যেসব পণ্যের ওপর শুল্কহার বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে, সেগুলোর দাম বেড়ে যেতে পারে। নিচে এমন কিছু পণ্যের তালিকা তুলে ধরা হলো, যেগুলোর দাম প্রস্তাবিত পরিবর্তনের ফলে বাড়তে পারে।
এর মধ্যে সিগারেট, অনলাইন কেনাকাটা, রড, সাবান-শ্যাম্পু, দেশে তৈরি মোবাইল ফোন, গৃহস্থালি প্লাস্টিক সামগ্রী, এলপিজি, দেশে তৈরি এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্ল্যাট, বলপয়েন্ট কলম, হেলিকপ্টার সার্ভিস, দেশে তৈরি ওয়াশিং মেশিন, দেশে তৈরি মাইক্রো ওভেন, দেশে তৈরি ইলেকট্রিক ওভেন, দেশে তৈরি ব্লেন্ডার-জুসার-মিক্সার-গ্রাইন্ডার, দেশে তৈরি ইলেকট্রিক কেটলি-ইস্ত্রি, দেশে তৈরি রাইস কুকার-প্রেসার কুকার, ব্লেড, দেশে তৈরি লিফট, দেশে তৈরি ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান, ওটিটি কনটেন্ট, বাণিজ্যিক ভবন (কমার্শিয়াল স্পেস), সেলফ-কপি পেপার-ডুপ্লেক্স বোর্ড-কোটেড পেপার, সুতা, ম্যানমেড ফাইবার, স্ক্রু-নাট-বোল্ট, সার্জিক্যাল কিটস, শিপ স্ক্র্যাপস গুডস, সিমেন্ট শিট, ক্রেডিট রেটিং সার্ভিস, থ্রি-হুইলার ব্যাটারি, সেটআপ বক্স ইত্যাদি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি আরও নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি বিনিয়োগ ও এফডিআই সুবিন্যস্তকরণ, সম্পূর্ণ আর্থিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং বৈশ্বিক ও দেশীয় অনিশ্চয়তার মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করার মতো কঠিন কাজও রয়েছে।
এছাড়াও আগামী অর্থবছরের বাজেটে কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, স্থানীয় শিল্পকে সহজতর করা, কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এফডিআই আকর্ষণ, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি, কর পরিপালন ঘাটতি কমানো, ভ্যাটের হিসাব ব্যবস্থা সহজীকরণের ওপর জোর দেওয়া হবে। এছাড়াও, ভ্যাট আদায়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পূরক শুল্ক হারকে যৌক্তিক করতে সংশ্লিষ্ট আইনের কিছু বিধান সরলীকরণের সম্ভাবনা রয়েছে।
এবারের বাজেটের আকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় কম। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সর্বশেষ বাজেটের আকার ছিল সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থাপন করেন। তবে চলতি অর্থবছরের মাঝপথে কাটছাঁটের ফলে সেই বাজেটের বাস্তবায়নযোগ্য আকার দাঁড়ায় সাত লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা।
বাজেট উত্তর আগামীকাল মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
এবছর সংসদ না থাকায় আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না এই বাজেটে। তবে বাজেট ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হয়। এরপর আগামী ২৩ জুনের পর যেকোনো একদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :