নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামীকাল সোমবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংক শাখায় পাওয়া যাবে নতুন নকশার টাকা। সাধারণ মানুষ এসব ব্যাংক থেকে নতুন নোট সংগ্রহ করতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির পরিবর্তে এবার নতুন নোটে স্থান পেয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনাগুলোর প্রতিকৃতি।
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে ২০, ৫০ ও ১,০০০ টাকার নতুন নোট সীমিত পরিসরে বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। আজ রোববার মতিঝিল অফিস থেকে প্রাথমিকভাবে কিছু নোট বিতরণ করা হয়েছে এবং তা কিছু নির্দিষ্ট ব্যাংকে সরবরাহ করা হয়েছে। এই ব্যাংকগুলো হলো: সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, পূবালী, উত্তরা, ডাচ্–বাংলা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ও ব্র্যাক ব্যাংক। এসব ব্যাংকের লোকাল অফিসে নতুন টাকা পৌঁছেছে, এবং আগামীকাল থেকে অন্যান্য ব্যাংকেও বিতরণ শুরু হবে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, চাহিদার তুলনায় নতুন নোটের সরবরাহ সীমিত। ফলে ঈদের আগে রাজধানী ছাড়া অন্যান্য জেলা শহরে নতুন নোট পাওয়া যাবে না।
জানা গেছে, এবারের ঈদ উপলক্ষে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা মূল্যমানের নতুন নোট ছাপানো সম্ভব হয়েছে, যার বেশির ভাগই বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে। অবশিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাগুলো থেকে সরাসরি বিনিময় করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, নতুন নোট বাজারে ছাড়লেও পুরোনো সব কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রাও চলমান থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান হাবিব মনসুর স্বাক্ষরিত ১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটি শতভাগ সুতি কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে থাকছে বেঙ্গল টাইগারের মুখ। নোটটিতে থাকছে বেগুনি রঙের আধিক্য। নোটের সামনে বাঁ পাশে থাকছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি। নোটের মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা-কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছন ভাগে আছে জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি।
গভর্নর স্বাক্ষরিত ৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটিও শতভাগ সুতি কাগজে মুদ্রিত। এই নোটে জলছাপ হিসেবে থাকছে বেঙ্গল টাইগারের মুখ। নোটটিতে গাঢ় বাদামি রঙের আধিক্য। এটির সামনের বাঁ পাশে আহসান মঞ্জিলের ছবি। মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা-কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি। আর পেছনে জলছাপের ডান পাশে থাকছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘সংগ্রাম’-এর ছবি। গভর্নর স্বাক্ষরিত ২০ টাকার ব্যাংক নোটটিও শতভাগ সুতি কাগজে মুদ্রিত। এটিতেও জলছাপ হিসেবে থাকছে বেঙ্গল টাইগারের মুখ। ২০ টাকার এই নোটে সবুজ রঙের আধিক্য। নোটটির সামনের বাঁ পাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দিরের ছবি। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা-কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি এবং পেছনে জলছাপের ডান পাশে থাকছে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ছবি।
গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর টাকা ছাপানো বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ, সব ধরনের টাকা ও ধাতব মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছিল। পাশাপাশি যেসব নোট ছাপানো ছিল, তা–ও বাজারে ছাড়া বন্ধ করে দেয়। ফলে ছেঁড়াফাটা ও পুরোনো ময়লা নোটে বাজার সয়লাব হয়ে যায়। এ জন্য নতুন টাকার চাহিদা এখন তুঙ্গে।
আপনার মতামত লিখুন :