জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় প্রত্যাহার, ফিরবে নির্বাচনে


বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক প্রকাশের সময় : জুন ১, ২০২৫, ১২:১৪ অপরাহ্ন /
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় প্রত্যাহার, ফিরবে নির্বাচনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দলটির নিবন্ধনের বিষয়ে করা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে, ১৪ মে শুনানি শেষে এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১ জুন তারিখ নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ। সেদিন জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।

শুনানি শেষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যেসব জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার সবকটিতেই জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন এবং বিভিন্ন সময় সরকারেও অংশগ্রহণ করেছেন।

তিনি জানান, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন প্রদান করেছিল। তবে পরে হাইকোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সেই নিবন্ধন বাতিল করেন। শিশির মনির আশা প্রকাশ করে বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করি, জামায়াতে ইসলামী তার নিবন্ধন পুনরায় ফিরে পাবে।”

প্রতীকসংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ব্যবহার করে আসছে। এই প্রতীক সুপ্রিম কোর্টেও ব্যবহৃত হচ্ছে ১৯৭২ সাল থেকে। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত এই প্রতীক নিয়ে অংশ নিয়েছে এবং বিজয়ীও হয়েছে, এমনকি মন্ত্রিত্বও পেয়েছে।

তিনি আরও জানান, ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীক সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আদালতের কাছে তাঁরা একটি নির্দেশনার আবেদন করেছেন, যাতে নির্বাচন কমিশন প্রতীক সংক্রান্ত বিষয়ে একটি উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।

২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ কয়েকজন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করার অনুমোদন দিয়ে সার্টিফিকেট দেন।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর ২৮৬ দিন বিলম্ব মার্জনা করে আপিল এবং ২৯৪ দিন বিলম্ব মার্জনা করে লিভ টু আপিল পুনরুজ্জীবিত চেয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয়।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আবেদন শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। পরে ২২ অক্টোবর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতে ইসলামীর আপিল পুনরুজ্জীবিত করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এরপর গত বছরের ৩ ডিসেম্বর আপিল শুনানি শুরু হয়।