নির্বাচন ডিসেম্বরেই হওয়া উচিত—জনগণের অভিন্ন প্রত্যাশা: সিপিবি সভাপতি


বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক প্রকাশের সময় : মে ৩১, ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন /
নির্বাচন ডিসেম্বরেই হওয়া উচিত—জনগণের অভিন্ন প্রত্যাশা: সিপিবি সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেছেন, শুধু বিএনপি নয়, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা দেশের সাধারণ মানুষের অভিন্ন দাবি। তিনি বলেন, ‘এটা বিএনপির একার দাবি নয়, অনেক আগেই আমরা এ দাবি তুলেছি। ঢাকায় সমাবেশ করে নির্বাচন চেয়েছি। এখন সবকিছু বিএনপির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কেন? এটি জাতির আকাঙ্ক্ষা, জনগণের আকাঙ্ক্ষা। এ দেশের তরুণ প্রজন্ম দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। সবারই আজ নির্বাচনের দাবি রয়েছে। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় এর বিকল্প কিছু নেই।’

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের চেরাগি পাহাড় এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের পরিচালনা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য করিডর প্রসঙ্গে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘অবিলম্বে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। সেটা অক্টোবর বা নভেম্বরেও হতে পারে, কিন্তু ডিসেম্বরের বাইরে নয়। ওই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে।’

তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরা কোনো অগণতান্ত্রিক বা অসাংবিধানিক শক্তির হাতে ক্ষমতা দেখতে চাই না। জনগণের ভোটে যে-ই আসুক না কেন, দেশের মানুষ একটি গণতান্ত্রিক পরিসর চায়। বর্তমান অবস্থা মানুষকে যেন দমবন্ধ করে ফেলেছে।’

নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে মন্তব্য করেন শাহ আলম। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও জাতিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন করবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। ষড়যন্ত্রকারীরা হাত ঢোকানোর সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলত নির্বাচন চান, নাকি উন্নয়ন চান? আর আপনি বলছেন, নির্বাচন না সংস্কার, না বিচার? এগুলো একসঙ্গে চলতে পারে। সংস্কারের কোনো শেষ নাই।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সিপিবি সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘ইতিমধ্যে আপনার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আপনার আওতায় প্রথমে নাগরিক কমিটি, তারপর জাতীয় নাগরিক পার্টি হয়। তাদের জন্য আপনার দরজা খোলা। অন্যরা সাক্ষাতের জন্য চার দিন অপেক্ষা করে পায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ নিয়ে তো আপনি বিতর্কের মধ্যে পড়ে গেছেন। মানুষের মধ্যে এখন আওয়াজ উঠেছে। ধারণা সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীর স্বনামধন্য ব্যক্তি মুহাম্মদ ইউনূসের নিরপেক্ষতা নিয়ে। তাঁর আওতায় নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি না, এই প্রশ্নও উঠেছে।’

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন শাহ আলম। দেশকে একটা যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে এখন জান্তা সরকার রয়েছে। আপনারা করিডর দিতে চাচ্ছেন। সমালোচনা হওয়ার পর বলছেন, ত্রাণ চ্যানেল দিতে চাচ্ছেন। ওখানে ভারত ও চীনের বিনিয়োগ রয়েছে। তারা দিচ্ছে না, আমরা কেন দেব। এতে করে আমাদের সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়বে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য উত্তম চৌধুরী, মোহাম্মদ মছিউদৌলা, ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।