চট্টগ্রামে পশুর হাটে চমক হিসেবে এলো উট, মূল্য ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা


বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক প্রকাশের সময় : মে ৩১, ২০২৫, ১০:৫২ পূর্বাহ্ন /
চট্টগ্রামে পশুর হাটে চমক হিসেবে এলো উট, মূল্য ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক কোরবানির পশুর হাটে এবার নতুন চমক হিসেবে দেখা মিলেছে মরুভূমির প্রাণী উটের। এর আগে ২০২২ সালে এক খামারি গোলাপি রঙের মহিষ এনে হাটে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন। তবে এবার উট হাজির করে আগের সব নজরকাড়া আয়োজনকে ছাড়িয়ে গেছে এবারের আয়োজন।

তিনটি উট আনা হয়েছে যশোরের বেনাপোলের ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে। হাটে তোলা মাত্রই দর্শনার্থী, ইউটিউবার ও কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমে উটগুলো দেখতে। ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্মের প্রতিনিধি গাজী সিরাজুল ইসলাম জানান, কোরবানির ঈদকে ঘিরে ব্যতিক্রম কিছু উপস্থাপনের ভাবনা থেকেই উট আনা হয়েছে। প্রতিটি উটের ওজন প্রায় ১২ থেকে ১৫ মণ, মূলত শৌখিন ও বিশেষ ক্রেতাদের জন্য এগুলো হাটে আনা হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি তারা প্রায় ৫০টি বড় আকৃতির গরুও এনেছেন।

তিনি আরও জানান, দুই বছর আগে ঢাকার একটি খামার থেকে এসব উট সংগ্রহ করে নিজ খামারে লালন-পালন করা হয়। প্রতিদিন উটগুলোকে ভুট্টা, ছোলা, গম, বুটের খোসা ও ঘাস খাওয়ানো হয়।

হাট কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাকে করে যশোর থেকে উটগুলো আনা হয় মইজ্জারটেক হাটে। প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার মধ্যে। তবে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য দরদাম হয়নি।

গতকাল দুপুরে হাটে গিয়ে দেখা যায়, মূল প্রবেশপথের বাঁ পাশে ত্রিপলের নিচে রাখা হয়েছে উটগুলো। সেগুলোর চারপাশে জটলা করে আছেন নানা বয়সী মানুষ। অনেকেই মুঠোফোনে ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন, কেউ কেউ আবার ইউটিউব কনটেন্ট তৈরিতে ব্যস্ত। হাটে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানানো হচ্ছে—এখানে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার পাশাপাশি উটও পাওয়া যাচ্ছে।

ডেইরি ফার্মের আরেক প্রতিনিধি মন্টু মিয়া বলেন, ‘মইজ্জারটেক হাটে চাহিদা বেশি, পশুর দামও তুলনামূলক ভালো পাওয়া যায়। তাই এবার উট এনেছি। আশাবাদী, উপযুক্ত দামে বিক্রি হবে।’

মইজ্জারটেক হাটের ইজারাদার জসিম উদ্দিন জুয়েল বলেন, ‘নগরের কাছাকাছি হওয়ায় হাট ইতিমধ্যেই জমে উঠেছে। এবার উট আসায় হাটে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। ক্রেতারা পছন্দমতো দরদাম করে পশু কিনতে পারছেন।’

ব্যাপারীরা জানান, সাধারণত ঈদ উপলক্ষে ভারতের রাজস্থান, গুজরাটের মরুভূমি এলাকা এবং হরিয়ানা থেকে উট ও দুম্বা আমদানি করা হয়। কখনো কখনো পাকিস্তান থেকে উট আনা হয়। সীমান্তবর্তী জেলা যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থলবন্দর হয়ে উটগুলো বাংলাদেশে আসে। প্রতিবছর হাটে গরু, খাসি, মহিষের পাশাপাশি উট ও দুম্বারও ক্রেতা থাকে। রাজধানী ঢাকার বাজারে উটের দেখা বেশি মেলে, চট্টগ্রামে তুলনামূলক কম দেখা যায়।

উটের মাংস অনেকের কাছেই একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। এই মাংস স্বাদে হালকা মিষ্টি ও নরম। বিশেষ করে কম বয়সী উটের মাংস বেশি সুস্বাদু। মাংসে চর্বির পরিমাণ থাকে কম।