দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে যেন একের পর এক উত্তেজনার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। ভারতের সাম্প্রতিক হামলার জবাবে এবার পাকিস্তানও পাল্টা আগ্রাসী সুরে কথা বলছে। দুই প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর দেশের সীমান্তে এখন উত্তেজনা চরমে। একদিকে ভারতের হুঁশিয়ারি তীব্র হচ্ছে, অন্যদিকে পাকিস্তানও পাল্টা আঘাতের মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে। পুরো উপমহাদেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধের আশঙ্কা।
গত তিন দিনে সীমান্তে বিস্ফোরণের গর্জনে কেঁপে উঠেছে দুই দেশ। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান তাদের একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে, তারা ভারতের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় সফল হামলা চালিয়েছে। ফলে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নতুন করে ঝাঁকুনি দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক মঞ্চে।
এমন উত্তেজনার মাঝে পাকিস্তানকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইরান ও সৌদি আরব। তবে ইসলামাবাদ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই মুহূর্তে হামলার মুখে নীরব থাকার পক্ষে নয়। তারা বলছে, এই পরিস্থিতিতে থেমে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, দুই দেশের যুদ্ধংদেহী মনোভাব এক ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে ধাবিত করছে গোটা অঞ্চলকে। মেঘ দেখেই যেমন কালবৈশাখীর আভাস মেলে, তেমনি বর্তমান পরিস্থিতিও ভয়াল কিছু আগমনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ, এই যুদ্ধ আর পাঁচটা যুদ্ধের মতো নয়—এবার ঝড়ের নাম হতে পারে পারমাণবিক যুদ্ধ।
বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ৯ মে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অসিম মনিরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। তিনি উভয়পক্ষকে সংযম দেখাতে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, দুই দেশ কার্যত এখন একটি সীমিত যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য ও উসকানি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। যদিও ভারত ও পাকিস্তান প্রকাশ্যে কূটনৈতিক ভাষায় সংযমের বার্তা দিয়ে যাচ্ছে, তবুও মাটির নিচে ক্রমেই জমা হচ্ছে উত্তেজনার বারুদ। যদি এই আগুন এখনই নিভানো না যায়, তাহলে সমগ্র উপমহাদেশকে এক ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :