মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে।বুধবার (০২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ২০-২৫ জনে একটি দল হাসপাতালে প্রবেশ করে এই হামলা করে। এসময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) চন্দন দাসের মুঠোফোন ও মানিব্যাগ ছিনতাই করে নিয়েছেন এমন অভিযোগ আহতদের।
জানাযায়, দুপুরে ২০-২৫ জনের একটি দল হাসপাতালের মধ্যে এসে জরুরী বিভাগ থেকে স্যাকমো চন্দন দাসকে টেনে হিচরে বের করে নেয়। জরুরী বিভাগের সামনে বসেই বেধরক মারধর করতে থাকেন। এসময় জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ও মেডিকেল অফিসার ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা ঠেকাতে আসেন। তখন এই দুই চিকিৎসককেও মারধর করেন হামলাকারীরা।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা বলেন, স্থানীয় মোঃ শিমুল শেখ নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল জরুরী বিভাগ থেকে স্যাকমো চন্দন দাসকে বের করে বেধকর মারপিট করতে থাকে। আমি এবং জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ঠেকাতে গেলে হামলাকারীরা আমাদেরও মারধর করে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। শিমুলের সাথে ওরিয়ণ ফার্মাসিউটিক্যালস-এর শাহিন ও একমি ফার্মাসিউটিক্যালস-এর রাবিবও হামলায় অংশগ্রহন করেন। হাসপাতালে ভিতরে এ ধরণের ঘটনা আমাদের খুবই হতাশ করেছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই।
স্যাকমো চন্দন দাস বলেন, জরুরি বিভাগে কাজ রোগীদের সেবা দিচ্ছিলাম। আমাকে টেনে হিচড়ে বের করে জরুরি বিভাগের সামনে বসেই মারধর করতে থাকে হামলাকারীরা।তারা আমার মুঠোফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে গেছে।
মারধরের কারণ সম্পর্কে স্যাকমো চন্দন দাস বলেন, মোঃ শিমুল শেখ এর আগেও বিভিন্ন সময় হাসপাতালে প্রবেশ করে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। আমার কাছে তারা তিনজন মিলে এক লক্ষ টাকা চাঁদা চেয়েছিল এটা না দেওয়ার কারণে এই হামলার ব্যবস্থা করেছেন।
এদিকে আজকের মধ্যে হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হলে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি ঘোষনা করেছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায় বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় সেনাক্যাম্পে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
শর্মী রায় আরও বলেন, শিমুলের বাড়িতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার সাবেক স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মুফতি কামাল হোসেন একটি বেসরকারি ক্লিনিক করেছেন। তিনিই এই হামলার নেপথ্যে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ডা. মুফতি কামাল হোসেনের মুঠোফোনে কল দিলে অন্য এক ব্যক্তি বলেন স্যার এখন আর এই নাম্বার ব্যবহার করেন না।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দিন বলেন, চিকিৎসকদের মারধরের বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।চিকিৎসকদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দিলে আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মোঃ শিমুল শেখের মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা চিকিৎসকদের জন্য খুবই হতাশাজনক একটা ব্যাপার। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হামলার কারণ এবং হামলাকারীদের বিষয়ে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :